Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব

স্মরনীয় ব্যক্তিত্বঃ

শিবগঞ্জ মানব সম্পদে সমৃদ্ধ একটি উপজেলা। এ উপজেলায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রয়েছেন। যারা আপন কির্ত্তিতে জাতীয় পর্যায়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন। নিচে এরূপকিছু স্মরণীয় ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হলোঃ

 

০১। জহুর আহম্মদ চৌধুরী

এককালে তিনি মালদহ জেলায় একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলে স্বীকৃত। তিনি মনাকষার খ্যাতনামা জমিদার মোঃ শাহ মুহম্মদ চৌধুরী এম-এল-সি সাহেবের জ্যৈষ্ঠ পুত্র। মাতার নাম ইজ্জতন নেছা চৌধুরানী। ১৯৩০ সালেমনাকষায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৪৬ সালে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। দু দু বার মালদহ জেলার জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৩৭ এবং ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে ইনি এম-এল-এ নির্বাচিত হন। তিনি দীর্ঘদিন চীফ হুইপ ছিলেন। চরিত্রগত উদারতা, স্পষ্টবাদিতা, দৃঢ়চিত্ততা ও ধীর স্থিরতা তার চরিত্রকে মাধুর্য্যমন্ডিত করেছিল। আজীবন তিনি জেলা মুসলিম  লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি মালদহ জেলার মুসলমানদের উন্নতির জন্য প্রাণপাত করে গেছেন।

 

 

। মুরতুজা রেজা চৌধুরী

তিনি মুসলমানদের নেতা ছিলেন। ১৯০৭ সালে মনাকষার জমিদার বংশে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৫৮ সালে ইন্তেকাল করেন। তার পিতা জোহদ আহম্মদ চৌধুরী এবং মায়ের নাম সালেহা চৌধুরানী। স্থানীয় বিভিন্ন জনহিতকর প্রতিষ্ঠানে তার অবদান রয়েছে। প্রথমে তিনি স্টেট মন্ত্রী এবং পরে কলকাতার ডেপুটি হাই কমিশনারের পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। রাজশাহী জেলা মুসলিম লীগ এবং মুর্শিদাবাদ জেলা মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন। মুর্শিদাবাদ স্কুল বোর্ডেরচেয়ারম্যান এবং মালদহ লোকাল বোর্ড ও জেলা বোর্ডের সদস্য ছিলেন। মনাকষা হুমায়ুন রেজা হাইস্কুল তারই প্রতিষ্ঠিত । তিনি অভিভক্ত বাংলায় বহুদিন এম,এল, এ, ছিলেন।

 

। মজিবর রহমান

তিনি শিবগঞ্জ থানার চক আলমপুর গ্রামে ১৯০৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন খ্যাতনামা ইতিহাসবিদ। তার পিতার নাম ফতেউল্লাহ বিশ্বাস। ইতিহাসে শাস্ত্রে তিনি এম-এ পাশ করেন। ১৯৪০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অকালে তার মৃত্যু হয়। তার রচিত অন্ধকূপ হত্যা রহস্য, সিরাজুদ্দৌলার কলঙ্ক মোচন এবং Sibajee and Afzal Khan প্রভৃতি গ্রন্থ বিখ্যাত।

 

। মোহাম্মদ আব্দুল করিম

শ্যামপুর চৌধুরী বংশের অন্যতম জমিদার। জনহিতকর জমিদার হিসাবে তার যতটুকু নাম না ছিল, বাংলা সাহিত্যের প্রথম যুগের লেখক হিসাবে তার নাম চির স্মরনীয় হয়ে আছে। শ্যামপুর ইউনিয়নের বাজিতপুরে তিনি ১২৫১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ‘আশা বৃক্ষ’ ও ‘জগৎ মোহিনী’ তার বিখ্যাত গ্রন্থ। তিনি মীর মশাররফ হোসেনের সমসাময়িক নাট্যকার।

 

। ডাঃ মইন উদ্দীন আহমদঃ

শিবগঞ্জ উপজেলারসামাজিক সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক অঙ্গঁনে যাঁরা নিবেদিত প্রাণ- ডাঃ মইন উদ্দিন আহমেদ তাঁদের মধ্যে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। যিনি মন্টু ডাঃ নামে সর্বাধিক পরিচিত ও জনপ্রিয়।

জন্মঃপিতা তৎকালীন বিশিষ্ট চিকিৎসক মরহুম ডাঃ কালিম উদ্দীন আহমেদ ও মাতা মরহুমা বেগম দেল আফরোজ এর সুযোগ্য সন্তান ডাঃ মইন উদ্দীন আহমদ ইং ১৯৩৬ সালের ১ নভেম্বর মনাকষা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন।

 

ছাত্রজীবনঃকলেজ জীবন থেকেই তিনি সক্রিয় ছাত্র রাজনীতিতে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। রাজশাহী মেডিকেল স্কুলে পড়াকালীন সময়ে তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাজশাহী মেডিকেল স্কুল শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। পরবর্তীকালে তিনি ট্রেড ইউনিয়ন রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। ১৯৬০ সালে শ্রমিক লীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে নিজেকে নিয়োজিত করেন। তিনি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করার পর মানব সেবার ব্রত নিয়ে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত হন।

 

জাতীয় রাজনীতিতে ভূমিকাঃ জনদরদী এনেতা সত্যিকারের জনগণের উন্নয়ন চেয়েছিলেন। ১৯৬৬ সালেতিনিনির্বাচিত হনমনাকষা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান।বঞ্চিত অবহেলিত শিবগঞ্জবাসীর সমস্যসমূহ জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরার জন্য এবং সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৭১-৭২ সালে গণ পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। এ নেতা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং সম্মুখ সমরে সাব সেক্টর কমান্ডারের গুরু দায়িত্ব পালন করেন।

 

১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হয়ে বিপুল জন সমর্থন নিয়ে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যার পর তৎকালীন শাসক গোষ্ঠির নির্যাতন ও অত্যাচারের কারনে দীর্ঘ ৬ (ছয়) মাস আত্মগোপন করার পর আবার ফিরে আসেন সক্রিয় রাজনীতিতে। ১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী হয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন, কিন্তু অল্প ভোটেরব্যবধানে পরাজিত হন। ১৯৮৫ সালে উপজেলা নির্বাচনে আবার বিপুল সংখ্যক জনসমর্থন নিয়ে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হনএবং এই সময় তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তাঁর স্বপ্নের আদিনা ফজলুল হককলেজ, দাদনচক পি.টি.আই, শিবগঞ্জ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করা হয়। শিবগঞ্জ জাতীয় স্টেডিয়াম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ হতে সোনামসজিদ পর্যন্ত মহাসড়ক এবং সোনামসজিদ পূর্ণাঙ্গ স্থল বন্দর নির্মাণ এর চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরী করেন। রাজনৈতিক সংগ্রামের বিনিময়ে তৎকালীন শাসক গোষ্টির চাপের মুখে নিজ দল (বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ) ত্যাগ করে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিতে বাধ্য হন। এই সময় তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ‘মাননীয় হুইপ’ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রায় দেড় বছর (০৬/০৭/১৯৮৬-০৬/১২/১৯৮৭) পর্যন্ত তিনি ব্যক্তিগতভাবে মনের বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টিতে অবস্থানের পর তিনি জাতীয় পার্টির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। ১৯৮৮ সাল হতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য হওয়ার জন্য জেলা ও কেন্দ্রেআবেদন করলে জেলা ও কেন্দ্র তা মঞ্জুর করেন। ১৯৯০ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয় বারের মত শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানহিসেবেনির্বাচিত হন।

 

মানবসেবী, জন দরদী এ নেতা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ  দায়িত্ব থেকে দলীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করেছেন। ১৯৭২-১৯৭৫ ইং সাল পর্যন্ত বৃহত্তর রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ শাখার প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩-১৯৭৬ ইং পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে নবাবগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৭৯-১৯৮৬ ইং পর্যন্ত নবাবগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২-১৯৭৬ ইং পর্যন্ত শিবগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৭৯-১৯৮৬ ইং পর্যন্ত থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে আসীন থেকে দলীয় কার্য পরিচালনা করেন।

 

জনসেবাঃআত্মমানবতারসেবায় নিয়োজিত এ নেতা অন্ধকারাছন্ন শিবগঞ্জবাসীকে নিয়ে এনেছেন আলোর পথে- দেখিয়েছেন সম্ভাবনার নতুন পথ,মনে জাগিয়েছেন বেঁচে থাকার তাগিদ। অ-শিক্ষিত অর্ধ-শিক্ষিত শিবগঞ্জবাসীকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা সহ বহু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। সুস্থ সাবলীলসংস্কৃতি বিকাশের জন্য প্রতিষ্ঠিত করেছেন বিভিন্ন ক্লাব ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। জন কল্যানাসার্থে নির্মাণ করেছেন হাট-বাজার, রাস্তাঘাট ইত্যাদি। দারিদ্রমুক্ত উন্নত স্বাস্থ্যসেবা  সমাজ গড়ার জন্য তিনি থেকেছেন সর্বদা সচেষ্ট।

 

শেষ কথাঃজনদরদী, মানবসেবী, সদালাপী মিষ্টভাসী ডাঃ মইন উদ্দিন আহমদ শিবগঞ্জ উপজেলার সমগ্র মানুষের প্রেম ভালবাসা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে রোগ সয্যায় শায়িত। শিবগঞ্জ উপজেলাবাসী মনে প্রাণে তাঁর সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন কামনা করে।

 

০৬। অধ্যাপক মোঃ শাহজাহান মিঞা, সাবেক সংসদ সদস্য :

অধ্যাপক মোঃ শাহজাহান মিঞা, পিতা- মরহুম ফয়েজ আহমেদ মিঞা, মাতা- মরহুমা নৈবর নেসা, শিবগঞ্জ পৌরসভায় তাঁর পৈত্রিক ভিটা ‘বড়বাড়ি’ তে ১৯৪৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চার ছেলে সন্তানের জনক। তিনি শিবগঞ্জ মডেল হাই স্কুল থেকে ১৯৬৪ সালে ম্যাট্রিকুলেশন এবং আদিনা ফজলুল হক মহাবিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে এইচ.এস.সি পাশ করে রাজশাহী বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে সম্মানসহ ১৯৭০ সালে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। বিশ্বাবিদ্যালয় জীবন থেকেই তিনি ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়েপড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা শেষ হতেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় এবং দেশমাতৃকার টানে তিনি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন রণাঙ্গনে সম্মুখ যুদ্ধে তিনি দু’বার গুলিবিদ্ধ হন, তার মধ্যে কানসাট রনাঙ্গনে উরুতে গুলিবিদ্ধ হলে মাত্রাতিরিক্তরক্তক্ষরণের কারণে তাঁর জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। পরে তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেন এবং পুনরায় রণাঙ্গনে ফিরে আসেন। রণাঙ্গনে অসীম সাহসিকতা তাঁকে চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলায় ক্যাপ্টেন শাহজাহান হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানের সাহচর্যে আসেন এবং ১৯৭৯ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতা, রাজনীতিতে এবং এলাকার উন্নয়নে নিষ্ঠার সাথে সম্পৃক্ততা তাকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয়। যার

 

ফলশ্রুতিতে তিনি একটানা পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময়তিনি জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। সাথে সাথে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় চাঁপাই নবাবগঞ্জ, লালমনির হাট ও কুড়ি গ্রাম জেলার ডিস্ট্রীক্ট মিনিস্টারের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়াও পর্যায়ক্রমে ধর্ম মন্ত্রণালয়, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ দীর্ঘ সময় এলাকায় রাস্তা, ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্টেডিয়ামসহ সকল কিছুর উন্নয়নের সাথে তার নামটি ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।

 

। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মোহাম্মদ এনামুল হক (এমপি):

বিদ্যুৎ, জ্বালানীও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিমন্ত্রী ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মোহাম্মদ এনামুল হক ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারী চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চাঁদপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম মোজাহার হোসেন এবং মাতা ফেরদৌস মহলের পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে তিনি জ্যেষ্ঠ সন্তান।জনাব এনামুল হক এবং মিসেস জিনাত এনামের একমাত্র কন্যা সন্তান আনিকা হক।

 

জনাব এনামুল হক তৎকালীন চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহকুমার শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নে অবস্থিত হুমায়ুন রেজা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬২ সালে ম্যাট্রিকুলেশন এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে ১৯৬৪ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পাশ করেন। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ১৯৬৮ সালে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং (ইলেট্রিক্যাল) এ ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ১৯৬৯ সালের ১৩ই জানুয়ারী তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মিলিটারী একাডেমীতে যোগ দেন এবং ইএমই কোরে কমিশন প্রাপ্ত হন।জনাব হক পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ক্যাপ্টেন হিসেবে কর্মরত অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বাধীনতা ঘোষণার ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১লা ডিসেম্বর ১৯৭১ তিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতির এডিসি নিযুক্ত হন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রথম এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য লাভ করেন এবং স্নেহভাজন হন।

 

সেনাবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২৯শে সেপ্টেম্বর ১৯৯২ সালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। তিনি ১৯৯৩-১৯৯৭ সময়কালে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আরইবি’র চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি গোপালগঞ্জ, ভোলা, শরিয়তপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সুনামগঞ্জসহ ৮টি অবহেলিত জেলায় পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি গঠন করেন এবং উক্ত জেলাসমূহের প্রত্যন্ত এলাকায় পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম চালু করেন।পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডেরচেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট, কানাডা, জাপান, ফিলিপাইন, ফ্রান্স এবং ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সফর করেন।

 

২০০১ সালে চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং নিরলসভাবে নিজেকে জনসেবায় নিযুক্ত করেন। একজন নিরহংকারী,মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজকর্মী হিসেবে তিনি নিজ এলাকায় ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। তাঁর প্রচেস্টায় এলাকার বহু শিক্ষিত বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে। নারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নেও তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। নারী শিক্ষা প্রসারেরলক্ষ্যে তিনি নিজ এলাকায় একটি উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বিগত ৭ বছর ধরে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ডের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছেন। ২০০৫ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় দলকে সংগঠিত করেন এবং বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর পর জেলার তিনটি সংসদীয় আসনেই আওয়ামীলীগ জয় লাভ করে।

 

নবমজাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মোহাম্মদ এনামুল হক চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ০১ আগস্ট২০০৯বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীহিসেবেশপথ গ্রহণ করেন।তিনি  তাঁর নির্বাচনী এলাকায়সর্বাক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

এছাড়া এ উপজেলায় আরও যারা স্মরনীয় ব্যক্তিত্ব রয়েছেন তারা হচ্ছেন-

 

  1. জনাব ইদ্রিশ আহম্মদ আলী মিয়া, সাবেক এমএলএ ও সমাজসেবক।
  2. জনাব রইস উদ্দীন বি-এল, সাবেক এম এল এ।
  3. জনাব মমতাজ উদ্দীন আহম্মেদ, বিশিষ্ট রাজনীতিবীদ ও সাবেক এমএল এ।
  4. জনাব মোঃ মাহবুব আলম, এমপি।
  5. মাইনুর রেজা চৌধুরী, সাবেক প্রধান বিচারপতি।
  6. জনাব খান বাহাদুর ফজলুল হক, সাবেক আইসিএস অফিসার।
  7. খান বাহাদুর ফজলুল রহমান, বিশিষ্ট সমাজ সেবক।
  8. জনাব মোঃ মমতাজ উদ্দীন, সাবেক সচিব।
  9. জনাব মোঃ আতাউর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রদূত।
  10. লেঃ জেনারেল আমিনুল করিম (রুমি) অবসর প্রাপ্ত।
  11. মেজর জেনারেল শফিকুল ইসলাম অবসর প্রাপ্ত।
  12. জনাব একরামুল হক (খুদি), সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।
  13. জনাব মাওলানা কেরামত আলী, শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ।
  14. মাওলানা আলহাজ্ব দাউদ হোসেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও খ্যাতনামা আলেম।
  15. মাওলানা আব্দুল করিম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও খ্যাতনামা আলেম।
  16. প্রফেসর মোঃ আবুল ফজল, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ।
  17. প্রফেসর ডঃ সারোয়ার জাহান, বিশিষ্ট সমাজ সেবক।
  18. প্রফেসর মুহম্মদ মিজান উদ্দিন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ।
  19. প্রফেসর মোঃ এনামুল হক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ।
  20. রফিকুন নবী (রনবী), বিশিষ্ট কার্টুনিষ্ট ও টোকাই এর স্রষ্টা।
  21. জনাব মোঃ মহসিন আলী মাস্টার, সাংবাদিক ও সমাজ সেবক।
  22. মরহুম আলহাজ্ব দাউদ আলী, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও হোমিও চিকিৎসক।
  23. মোঃ রফিকুল ইসলাম, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী।
  24.  জনাব মোঃ মনিরুল ইসলাম ও সমাজসেবক।
  25. শ্রী কার্তিক চন্দ্র, বিশিষ্ট সমাজ সেবক।