+কানসাটের জমিদার বাড়ীঃ
শিবগঞ্জ উপজেলা কানসাট একটি প্রাচীন গ্রাম। এখানকার জমিদারদের আদিপুরুষ প্রথমত বগুড়া জেলার ‘কড়ইঝাকৈর’ গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। দস্যু সরদার পন্ডিতের অত্যাচারে তারা ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছাতে স্থানান্তরিত হন। পরে তারা নবাবগঞ্জের কানসাটে এসে স্থায়ী হন। সূর্য্যকান্ত, শশীকান্ত ও শীতাংশুকান্ত এই বংশের অধঃস্তন বংশক্রম। প্রজা সাধারণের জন্য এরা কিছু রেখে যেতে পারেননি। এরা মুসলিম বিদ্বেষী জমিদার হিসেবে কুখ্যাতি লাভ করেন। জমিদার কার্য ছাড়াও এরা হাতির বেচাকেনা করতেন। আসামে এদের একটি ‘খেদা’ ছিল। এই জমিদার পরিবারে মুসলিম বিদ্বেষের বহু দৃষ্টান্ত এতদঞ্চলে বিদ্যমান। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে স্থানীয় কাগজী পাড়ায় মুসলিম সম্প্রাদায়কে উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্রের ফলে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে এক দাঙ্গা-হাঙ্গামার সুত্রপাত হয়। ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে স্থানীয় শ্যামপুর চৌধুরী পরিবারের নেতৃত্বে বাজিতপুর গ্রামের আম্রকাননে প্রায় ১২টি ইউনিয়নের মুসলমান সম্প্রদায় একত্রিত হয়ে উক্ত ঘটনার জোর প্রতিবাদ জানায় এবং একটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় জমিদার শিতাংশু বাবু হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা অনুমান করে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়কে ডেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং সাময়িক বিপদ হতে রক্ষা পান।
প্রাচীনকালে এখানে কংসহাট্টা নামক রাজার বাড়ী ছিল বলে জানা যায়। তার নামানুসারেই স্থানটির নাম কানসাট হয়। আবার অনেকে এর অন্য প্রকার নামকণের কথাও বলে থাকেন। ‘কান+সাট’= কানসাট। সাট অর্থ বন্ধ কর। বঙ্গ অধিকারী রানী স্বর্ণময়ীর রাজধানী ছিল নিকটস্থ পুখুরিয়া গ্রামে। পুখুরিয়া বাগদীপাড়ায় এখনও এর ধ্বংসাবেশেষ দেখা যায়। এই রানীর তোপকামানের শব্দে স্থানীয় লোকের কান বন্ধ করতে হতো। তাই কানসাট নামের উৎপত্তি এভাবেই হয় বলে অনেকের ধারণা।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস